নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামীকাল বুধবার।
নির্বাচনে কেউ প্রার্থী হতে চাইলে এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এছাড়া কেউ চাইলে এ সময়ের মধ্যে তার মনোনয়নপত্র অনলাইনের মাধ্যমেও জমা দিতে পারবেন।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
আসাদুজ্জামান বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের জন্য কিছু করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
ইসির নিদের্শনায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় প্রার্থী বা তার পক্ষে শোডাউন করা যাবে না। প্রার্থী বা তার পক্ষে ৫ জনের বেশি লোক রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ভিড় করতে পারবেন না। নির্বাচন সামনে রেখে কোনো প্রার্থী জনসভা, মিছিল, মিটিং করতে পারবেন না। কেবল পথসভা করতে পারবেন।
এছাড়া প্রার্থীদের পোস্টার হতে হবে সাদাকালো। প্রতিটি পোস্টারের নিচে পোস্টারের সংখ্যা, প্রেসের ঠিকানা, প্রকাশকের নাম দেওয়া বাধ্যতামূলক। না হলে সেসব পোস্টার নির্বাচন কমিশনের কাছে অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। পোস্টারের সাইজ হতে পারবে সর্বোচ্চ ২৩ ইঞ্চি বাই ১৮ ইঞ্চি।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার নন-এমন কাউকে পোলিং এজেন্ট করা যাবে না। নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে পোলিং এজেন্টদের দুই কপি ছবি এবং নামের তালিকা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। প্রার্থী হতে ২০ হাজার টাকা জামানত দিতে হবে। নগদ টাকায় জামানত নেওয়া হবে না। পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারের অনুকূলে এ টাকা জমা দিতে হবে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় হলফনামা আকারে ৮টি তথ্য দিতে হবে। ব্যয়ের উৎসের বিবরণী, আয়কর রিটার্নের কপি জমা দিতে হবে।
মনোনয়ন ফরমে কোনো ভুল হলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। তাই সম্ভাব্য প্রার্থীকে সতর্কতার সঙ্গে মনোনয়নপত্র পূরণ করতে হবে।
মনোনয়ন দাখিলের আগে প্রার্থীকে অবশ্যই যেকোনো তফসিলী ব্যাংকে নতুন হিসাব খুলতে হবে। নির্বাচনের সমুদয় ব্যয় এ একাউন্ট থেকেই করতে হবে। এই একাউন্টের নম্বর, ব্যাংক ও শাখার নাম মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করতে হবে।
নির্বাচনের ফলের গেজেটে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব রিটার্নিং অফিসার এবং কমিশনে জমা দিতে হবে। এছাড়া ব্যক্তিগত খরচের হিসাব ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে। প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচার কাজ চালানো যাবে না।
এছাড়া কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বা গ্রহণের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে। লিখিত ছাড়া কোনো এজেন্টের অভিযোগ আমলে নেবে না কমিশন। কোনো ভোটার ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে না ফেলে বাইরে নিয়ে এলে কমিশন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া অন্য কোনোভাবে কোনো ব্যালট পেপার বাইরে চলে এলে ওই ব্যালট পেপার যে প্রদর্শন করবেন কমিশন তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন এবং ব্যাটালিয়ান আনসার মোতায়েন করা হবে। তারা মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। প্রতিটি মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে ১ জন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। নির্বাচনী অপরাধসমূহ বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেওয়া হবে। বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা যেকোনো অনিয়মের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দিতে পারবেন।
ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ব্যতিত কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর। ভোট ৩০ ডিসেম্বর।